তুরস্ক-সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চলে ভয়াবহ ভূমিকম্পের এক সপ্তাহ পর ধ্বংসস্তূপ থেকে আরও ৯ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) তাদের উদ্ধার করা হয়। এ পর্যন্ত দেশ দুটিতে ভয়াবহ এই দুর্যোগে ৪১ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।
শুধু তুরস্কেই প্রাণ হারিয়েছে ৩৫ হাজার ৪১৮ জন। আর সিরিয়ায় মারা গেছে পাঁচ হাজার ৮০০ জনেরও বেশি। দেশ দু’টিতে ঘটনার আটদিন পরও উদ্ধার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
মঙ্গলবার সবশেষ যাদের উদ্ধার করা হয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছেন কাহরামানমারাস প্রদেশের ১৭ ও ২১ বছর বয়সী দুই ভাই। অন্যদিকে সিরিয়ীয় একজন পুরুষ ও একজন তরুণীকে উদ্ধার করা হয়েছে। এক উদ্ধারকারী জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপে আরও কিছু মানুষ বেঁচে থাকতে পারেন।
ভূমিকস্পে তুরস্ক-সিরিয়া ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। সিরিয়া ও তুরস্কে স্মরণকালের ভয়াবহ ভূমিকম্পের অষ্টমদিনে এসেও ধ্বংসস্তূপ থেকে মরদেহ বের করে আনছে উদ্ধারকর্মীরা। তবে প্রচন্ড ঠাণ্ডার পাশাপাশি বৈরি আবহাওয়ায় ত্রাণ ও উদ্ধার তৎপরতা ব্যাহত হচ্ছে।
ভূমিকম্পে আহত হয়েছে লক্ষাধিক মানুষ। হাসপাতালগুলোতে নেই নতুন রোগী ভর্তিও জায়গা। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও খাদ্য সংকটও রয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে, গেল সপ্তাহের মারাত্মক এই ভূমিকম্পে ২ কোটি ৬০ লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বেশ কটি হাসপাতালও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভয়াবহ ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা ৫০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের জরুরি ত্রাণবিষয়ক সমন্বয়কারী মার্টিন গ্রিফিথস।
১২৮ ঘণ্টা পর তুরস্কে ভূমিকম্পের ধ্বংসস্তুপ সরিয়ে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে এক শিশুকে। দু’মাস বয়সি ওই শিশু টানা ১২৮ ঘণ্টা ধ্বংসস্তূপের নিচেই চাপা পড়েছিল। সে বেঁচে থাকবে, আশা করেননি কেউ। কিন্তু এত মৃত্যুর মাঝে যেন সজোরে প্রাণের ঘোষণা করেছে এই শিশু। জীবিত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করা গেছে। ধ্বংসস্তুপ সরতেই শিশুর কান্নার শব্দ পেয়ে আনন্দে হাততালি দিয়ে উঠে উদ্ধারকারীরা।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি ৪৫ সেকেন্ডের ভূমিকম্পের পর আরও ২ হাজার ৩শ’র বেশি আফটারশক হয়েছে বলে জানিয়েছে ভূতাত্বিক জরিপ সংস্থা। এতে যেসব ভবন এখনও অক্ষত আছে সেগুলোর স্থায়ীত্ব নিয়েও শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এর আগে ১৯৩৯ সালে তুরস্কে শক্তিশালী ভূমিকম্পের আঘাতে অন্তত ৩৩ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়।